বঙ্গরুপ টেলিভিশন প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর , ২০২২ , ০৫:০৫ এম
নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে আজও উত্তাল মাইজদী শহর।
অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে রবিবার দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত মাইজদী-সোনাপুর প্রধান সড়কের টাউন হল মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে হাজারও শিক্ষার্থী।
এ সময় যানবাহন আটকা পড়ে যায়। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে দ্রুত শাস্তি ও মামলার চার্জশিট দেওয়ার আশ্বাস দিলে সড়ক থেকে মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনে চলে যায় তারা।
এদিকে, গতকাল শনিবার রাত পৌনে ৮টায় নোয়াখালী পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম নিজ কার্যলয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঘটনার মূল আসামি গৃহশিক্ষক আব্দুর রহিম রনি ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ভিক্টিম তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে ক্ষিপ্ত হয়ে বালিশ চাপা দিয়ে ছুরি দিয়ে হত্যা করে বলে দায় স্বীকার করে। আসামি বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে বলে তিনি জানান।
এর আগে গতকাল শনিবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এ কর্মসূচি জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়ক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, নোয়াখালী প্রেসক্লাব ও স্ব স্ব স্কুলের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেছে। এ সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষক নেতা ও অভিভাবকরা এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় ভিক্টিমের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে সুধারাম থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ঘটনার মূল আসামি আবদুর রহিম রনিসহ এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন নেছা বলেন, আমরা প্রত্যেকেই যার যার জায়গায় থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোথাও কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দেখলে দাঁড়াতে হবে এবং সমাধান করতে হবে। কিশোর গ্যাং গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং অদিতা হত্যাকারীদের দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে, নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম জানান, অপরাধী শনাক্তে চৌমুহনী ও মাইজদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দুই শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা শহর মাইজদীতে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসমিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) ধর্ষণের পর গলাকেটে হত্যা করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের পরপর পুলিশের একাধিক দল পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি (২৫), ইসরাফিল (১৪), তার ভাই সাঈদকে (২০) গ্রেফতার করে। গতকাল আদালত রনির ৩ দিনের মঞ্জুর করেন।