বঙ্গরুপ টেলিভিশন প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর , ২০২২ , ০৯:০৬ এম
সারাদেশের উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন বদলে যাচ্ছে পাহাড়ী জেলা খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। খাগড়াছড়ির পাহাড়ি সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রীজের জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে সুপ্রশ্বস্থ পিসি গার্ডার ও আরসিসি সেতু। পাহাড়ী সড়কে স্থায়ী পিসি গার্ডার ও আরসিসি সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে দুর্ঘটনা রোধের পাশাপাশি স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যস্থার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে।
এ সেতুগুলো নির্মাণের মধ্য দিয়ে পাহাড়ী সড়কে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি জেলার অধিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নসহ পর্যটনখাত সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
গত এক দশকে খাগড়াছড়ির সড়ক বিভাগের অধীন অধিকাংশ পাটাতনের ঝুঁকিপুর্ণ বেইলি ব্রীজের স্থলে নির্মাণ করা হয়েছে স্থায়ী আরসিসি সেতু। এর অংশ হিসেবে খাগাড়ছড়ির বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে আরো ৪২টি স্থায়ী সেতু। এ সেতুগুলো নির্মাণের মধ্য দিয়ে পাহাড়ী জনপদ খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্ধন সাধিত হয়েছে। গতি এসেছে পাহাড়ের অর্থনীতিতে।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সারাদেশের ১শ’টি সেতুর সঙ্গে খাগড়াছড়ির ৪২টি সেতু ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে পিসি গার্ডার সেতু, আরসিসি সেতু ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২‘শ ৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪২টি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির বিভিন্ন সড়কে এসব সেতু নির্মিত হয়েছে। এরমধ্যে দীর্ঘ সেতুটি হচ্ছে খাগড়াছড়ির ‘লোগাং বাজার সেতু’। ১৪৩ দশমিক ৫ মিটারের দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
পরিবহন চালকদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, এক সময় বেইলি ব্রিজের কারণে প্রায়ই পাহাড়ী সড়কে দুর্ঘটনা ঘটতো। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতো। পাকা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে কয়েক দশকের দুর্ভোগের শেষ হয়েছে।
পাকা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে পাহাড়ের অর্থনীতিতে নতুন গতি এসেছে জানিয়ে খাগড়াছড়ি ট্রাক-মিনি ট্রাক মালিক গ্রæপের সাধারন সম্পাদক মো. আকতার হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের স্বদিচ্ছায় পাহাড়ী সড়কে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ফলে এখন কম সময়ে ও নিরাপদে পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে। পাহাড়ী আঁকাবাঁকা সড়কে পাকা সেতুগুলো পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করবে বলে মনে করেন তিনি।
খাগড়াছড়ির গোমতি ইউনিয়ন পরিসদের চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, গোমতি সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে সাধারন মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর হয়েছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন,বাজারজাত ও অসুস্থ রোগী পরিবহন সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে।
নারী উদ্যোক্তা ও সাম্পারি গ্রæপ অব ইনেসিয়েটিভ‘র চেয়ারপার্সন শাপলা দেবী ত্রিপুরা বলেন, আশির দশকে নির্মিত ব্রিজগুলো পাহাড়ের মানুষের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছিল। পাকা সেতুগুলো নির্মাণ হওয়ার ফলে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ হয়েছে। পাহাড়ের অর্থনীতিতে গতির সঞ্চারিত হবে।
কাঙ্খিত সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থায় মজবুত ভিত্তি রচিত হবে জানিয়ে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, সেতু গুলো নির্মাণের কারনে স্থানীয় অর্থনীতি গতি পেয়েছে। পাহাড়ি সড়ক প্রশ্বস্তকরণ প্রকল্প চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।